স্বাধীনতা বনাম দাসত্ব

কেউ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা কেনে আর কেউ কেনে দাসত্ব।
এক বনে ছিলো এক বাঘ আর আরেকটা সিংহ, তারা কেউ কাওকে দেখতে পারত না। কে বনের রাজা তাই নিয়ে বাঘ সিংহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করল। বাঘের সাথে নেকড়ে যোগ দিলো। তারপর, তারপর বাঘ বনের কিছু মোষ মেরে বলে "সিংহের মোষ মারলাম" আর সিংহ বনের কিছু মোষ মেরে বলে "বাঘের মোষ মারলাম"। বনের কিছু মোষ সিংহের আর কিছু মোষ বাঘের পক্ষ নিলো। আর শেয়াল বললো তোমরা আমাকে রাজা বানাও। কিছু মোষ বললো তোমরা শুধু শুধু আমাদের মেরো না, তারচেয়ে কে বনের রাজা হবে তা আলোচনা করে ঠিক কর। সিংহ বলল যে আলোচনার কথা বলে সে বনের শত্রু, তাকেই আগে খাব। এর পর বাঘ আর সিংহ ইচ্ছেমত বনের মোষ মারতে লাগলো। 
বনের এই মোষ গুলো কবে তার নিজের শক্তি বুঝবে? কবে বুঝবে যে তাদের শাষন করার জন্য বাঘ বা সিংহের দরকার নাই ? কবে তারা বাঘ আর সিংহ উভয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে নিজের স্বাধীনতা অর্জন করবে? কবে তারা বুঝবে যে বনের আইন রক্ষা করার জন্য মোষদের বানানো হয়নাই, বরং মোষদের সুরক্ষার জন্য বনের আইন করা হয়েছে। 
খালেদা জিয়ার উপর অবিচার করা হচ্ছে সত্য। তবে ক্ষমতায় যেতে পারলে খালেদা আর তার নেতারা ঠিকই এর শোধ নেবে। যেসব মানুষ আগুনে বা গুলিতে মরছে তারা কি কোনদিন, কোনভাবে এর বিচার পাবে? আপনার আমার বাচ্চাদের শিক্ষা জীবন ব্যহত হলেও খালেদা জিয়া নিজের নাতনিদের শিক্ষা জীবন একটুকুও ব্যহত হতে দিলেন না। কারন অশিক্ষিত আমাদের শাসন করতে খালেদা- হাসিনার নাতনিদের শিক্ষা থাকতে হবে না!

খালেদা জিয়া নিজের নাতনিদের পরীক্ষা দিতে মালয়েশিয়া পাঠায়, আর দেশের অনন সবার নাতনিদের পরীক্ষা অবরোধ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখে।
আরে পাবলিক-কে আগুনে না পুড়িয়ে সাহস থাকে তো আপনার প্রতিদ্দ্বন্দী কোন শীর্ষ নেতার গাড়িতে ইট মেরে দেখান। নলি খুলে হাতে ধরিয়ে দিবে। পরিবারের সবাইকে দেশের বাইরে নিরাপদে রেখেছেন, নিজেও ঘর থেকে বের হন না। নিরাপদে বসেবসে মানুষ পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দিচ্ছেন। সরকারে যাওয়ার এত লোভ থাকলে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। আমরা যারা সাধারন মানুষ তাদের বিরুদ্ধে লেগেছেন কেন।

আমি একপেশে কথা বলছি কারন, খালেদ জিয়া তার নাতনিদের আমাদের সমান বিচার করেন নাই। আমার আর আওয়ামী বাকশালীদের মুখের বুলি একই রকম নয়। আমি আন্দোলনের বিপক্ষে নই, অথবা এই আন্দোলনে জনগনের সমর্থন নেই এমন কিছুও বলতে চাই না। পরীক্ষা যত দিন ইচ্ছা পেছাক, আমার কোন আপত্তি নাই। হাছিনার ছেলের সাথেই যদি তুলনা করবেন তাহলে হাছিনা/খালেদার মধ্যে পার্থক্ক কি? যাদের ভোট দেব তাদের সবারই গোরা রসুনের মত এক হলে ভোটাধিকার পেয়ে কি হবে? 
সহিংসতা যেই ঘটাক দায়ভার আন্দোলন আহ্ববান কারিকেই নিতে হবে, অথবা প্রমান করতে হবে যে সহিংসতা অন্ন কেও ঘটাচ্ছে। আমি কোনভাবেই আন্দোলনের বিপক্ষে না বরং সক্রিয় ভাবে অংশ নিতে উদগ্রীব। এবং অতীতে অনলাইনে আমার সাধ্যমত করেছিও। কিন্তু আমি খুব ব্যথিত যে গত ৬ বছরে বিএনপিকে ভোট বা জিয়া পরিবার ছাড়া অন্ন কোন ইসুতে খুব কমই আন্দোলন করতে দেখেছি। আরও বেশি ব্যাথিত হয়েছি যখন দেখেছি যে বিএনপির কাছেও সিনিয়র নেতাদের চেয়ে সন্ত্রাসী নেতার দাম বেশি। আমি বিএনপি/আওয়ামী এর মধ্যে তুলনামূলক ভালকে চাইনা। আসল ভাল কাওকে চাই। 
জনসভা বা মানববন্ধনও করতে দেয়না মানে কি? কোকো বা গো.আজমের জানাজায় লোক কম হয়েছিল? জনসভা করার ইচ্ছা থাকলে পুলিস-রেব আটকাতে পারত না। পুলিশ গুলি করে কয়জনকে মারতো ৫০, ১০০। যে কয়জনই মারুক ওখানেই সরকারের পতন হয়ে যেত, কেও ঠেকাতে পরত না। আর যারা মারা যেত তারাও রাজনৈতিক ভাবে লাভবান হত। কিন্তু গত কয়েক দিনের আন্দোলনে এর চেয়ে অনেক বেশি মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, যাদের কেও এই আন্দোলন থেকে কোনভাবেই লাভবান হবে না। ফখরুল , রিজভীকে রিমান্ডে নিয়েছে, আন্দোলন করে ক্ষমতায় যেতে পারলে তারাও প্রতিপক্ষের রিমান্ডের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু যেসব নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে তারা কি পাবে? বিএনপি তাদের আন্দোলনে নিবেদিত বা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা বা পুনর্বাসন করেছে এমন উদাহরন খুব কম। অনেক রাজনৈতিক দল তাদের আন্দোলনে নিবেদিত বা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা বা পুনর্বাসন করে। 
আমি একটি মাত্র এঙ্গেল থেকে পৃথিবীকে দেখি না। তাই বর্তমানে বিএনপি/আওয়ামী কে প্রায় সমান অপছন্দ করি। আমার এবং আপনার সবার বিকল্প কিছু চিন্তা করা উচিত।